মঙ্গলবার, ০৩ Jun ২০২৫, ১১:৪০ পূর্বাহ্ন
আবীর আকাশ- লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
লক্ষ্মীপুরে হেফজ বিভাগের ছাত্র সানিম হোসাইনকে(৮) ‘পিটিয়ে হত্যা’ মামলায় দ্বিতীয় আসামি অধ্যক্ষ বশির আহমদসহ জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন করা করেছে নিয়ে হতের স্বজন ও এলাকাবাসী। ঘটনার ১৮ দিন পার হলেও পুলিশ বশির ও ফয়সালকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তারা দুজনই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
জানা গেছে, এর আগেও ওই মাদ্রাসায় নাবালক আরও দুই ছাত্রকে হত্যা করা হয়। একজনকে হত্যা করপ চুলার উপর উত্তপ্ত ডালে ফেলে ঘটনা ভিন্নখাতে চালায় এবং আরেকজনকে পানিতে সাঁতাট শিখাতে নিয়ে ডুবে গেলে রেখে চলে আসে। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধার করা হয়। নির্যাতন ও বলাৎকার করায় একাধিক অভিযোগে জরিমানাও দিয়েছেন শিক্ষকরা।
রবিবার (১ জুন) দুপুরে শহরের উত্তর তেমুহনীতে আল মুঈন ইসলামী একাডেমীর সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ শুরু করে গোল চক্কর হয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করা হয়।এরপর আবার বিক্ষোভ মিছিল করে আল মুঈন ইসলামী একাডেমীর সামনে গিয়ে মাদ্রাসা চলমান থাকায় বিক্ষুব্ধ জনতা ইট পাটকেল ছুঁড়ে কিছু গ্লাস ভাংচুরের চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। মানববন্ধনে অংশ নেয় নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী।
এ সময় বক্তব্য রাখেন, মাওলানা নুরনবী, খালেদ মাহমুদ, ইকবাল মাহমুদ, নিহত সানিমের বাবা হুমায়ুন কবির মাতাব্বর ও মা জয়নব বিবি প্রমুখ। মামলা সূত্র জানায়, গত ১৩ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে জেলা শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকায় মাদ্রাসা থেকে নিহত সানিমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এর আগে দুপুরে সানিমের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। নিহত সানিম রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চরবংশী গ্রামের ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির মাতব্বরের ছেলে ও মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র। সে ২২ পারা কোরআনে হাফেজ ছিলেন। ঘটনার রাতেই সানিমের বাবা বাদী হয়ে সদর থানায় ৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৫ জনের নামে মামলা করেন।বশির ছাড়া অন্যরা হলেন—শিক্ষক হাফেজ মাহমুদুর রহমান মাহমুদ ও ফয়সাল। এরমধ্যে ঘটনার দিন মাহমুদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে বশির ও ফয়সাল এখনো গ্রেপ্তার হয়নি।
বক্তব্যে মাওলানা নুরনবী, খালেদ মাহমুদ ও ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘শিক্ষকরা বলছে সানিম আত্মহত্যা করেছে মাদ্রাসার ৩ তলায়। কিন্তু তার মরদেহ পাওয়া গেছে নিচতলার একটি কক্ষে। নিচতলায় নামানোর কোন ফুটেজ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ দেখাতে পারেনি। অভিযুক্তরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
সানিমের বাবা হুমায়ুন কবির ও মা জয়নব জানান, তাদের ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। দফায় দফায় তাকে পিটিয়েছে। সানিম ফাঁসি দেয়নি। তার হত্যাকারীদের কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন তারা। এ ব্যাপারে চেষ্টা করেও মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা বশির আহমেদের বক্তব্য নেওয়া যায়নি।